ডায়বেটিক রোগের লক্ষন কি ? চিকিৎসা এবং ডায়াবেটিক রোগীদের খাদ্যতালিকা
ডায়াবেটিস (Diabetes) হলো একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা রক্তে গ্লুকোজের (blood sugar) পরিমাণ অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার কারণে হয়। এটি মূলত ইনসুলিন হরমোনের ঘাটতি বা ইনসুলিনের কার্যকারিতার অভাবে হয়ে থাকে।
🔍 ডায়াবেটিসের লক্ষণসমূহ:
১. প্রচণ্ড পিপাসা লাগা
২. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
৩. প্রচণ্ড ক্ষুধা লাগা
৪. ওজন কমে যাওয়া
৫. দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়া
৬. ক্ষত বা কাটা দেরিতে শুকানো
৭. শরীরে ঘন ঘন ক্লান্তি অনুভব করা
৮. ত্বকে চুলকানি ও সংক্রমণ
৯. হাত-পা ঝিন ঝিন করা বা অসাড় লাগা (বিশেষ করে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে)
🩺 চিকিৎসা:
ডায়াবেটিসের চিকিৎসা নির্ভর করে রোগের ধরণ ও অবস্থার ওপর। মূলত তিন ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়:
১. লাইফস্টাইল পরিবর্তন:
-
নিয়মিত ব্যায়াম (হাঁটা, যোগব্যায়াম ইত্যাদি)
-
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
-
ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করা
-
ঘুম যথেষ্ট হওয়া
২. ওষুধ:
-
টাইপ ১ ডায়াবেটিসের জন্য ইনসুলিন ইনজেকশন
-
টাইপ ২ ডায়াবেটিসের জন্য মেটফরমিন, স্যুলফোনাইল ইউরিয়া, ডিপিপি-৪ ইনহিবিটরস, ইত্যাদি।
(চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ করা জরুরি)
৩. রক্তে শর্করার নিয়মিত পরিমাপ:
-
ঘরে গ্লুকোমিটার দিয়ে নিয়মিত ব্লাড সুগার চেক করা।
🍽️ ডায়াবেটিক রোগীদের খাদ্যতালিকা:
✅ গ্রহণযোগ্য খাবার:
-
শাকসবজি: লাউ, শিম, পালং শাক, করলা, ঢেঁড়স ইত্যাদি
-
ফল: আপেল, পেয়ারা, জাম, কমলা (অল্প পরিমাণে, বেশি মিষ্টি নয়)
-
সম্পূর্ণ শস্য: ব্রাউন রাইস, ওটস, চিড়া, আটার রুটি
-
প্রোটিন: ডিমের সাদা অংশ, মুরগির মাংস (চামড়া ছাড়া), মাছ, ডাল
-
দুধ/দই: স্কিমড দুধ ও টক দই (কম চর্বিযুক্ত)
-
চিনি মুক্ত খাবার ও পানীয়
❌ পরিহারযোগ্য খাবার:
-
চিনি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার (রসগোল্লা, মিষ্টি, চকলেট ইত্যাদি)
-
সফট ড্রিংকস ও প্যাকেটজাত জুস
-
ভাজাপোড়া, ফাস্ট ফুড, চিপস
-
সাদা ভাত ও সাদা আটা
-
কলা, আঙুর, কাঁঠাল (উচ্চ গ্লাইসেমিক ফল)
📌 বিশেষ পরামর্শ:
-
প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
-
ওজন, রক্তচাপ ও সুগার নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
-
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বা ইনসুলিন পরিবর্তন করবেন না।