ট্রাইকোমোনিয়াসিস (Trichomoniasis) রোগ কী?
ট্রাইকোমোনিয়াসিস (Trichomoniasis) রোগ কী?
ট্রাইকোমোনিয়াসিস হল একটি যৌনবাহিত রোগ (STI) যা Trichomonas vaginalis নামক প্রোটোজোয়া প্যারাসাইটের সংক্রমণের কারণে হয়। এটি সাধারণত যৌন সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই এই রোগ হতে পারে, তবে নারীদের মধ্যে লক্ষণ বেশি দেখা যায়।
ট্রাইকোমোনিয়াসিস হওয়ার কারণ
ট্রাইকোমোনিয়াসিস সরাসরি প্যারাসাইটের সংক্রমণ থেকে হয়। এটি সাধারণত সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়।
প্রধান কারণসমূহ:
- যৌন সংস্পর্শ: অসুরক্ষিত যৌন মিলনের মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটে।
- অশুচি যৌন অভ্যাস: যৌনাঙ্গের সঠিক পরিষ্কার না রাখা।
- একাধিক যৌন সঙ্গী থাকা: এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- সংক্রমিত যৌন খেলনা ব্যবহার: সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত না করলে।
- যৌন সঙ্গীর সংক্রমণ: যদি সঙ্গী সংক্রমিত হয়।
ট্রাইকোমোনিয়াসিস রোগের লক্ষণসমূহ
অনেকের ক্ষেত্রে এই রোগের কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তবে লক্ষণ দেখা দিলে তা সাধারণত সংক্রমণের ৫ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে প্রকাশ পায়।
নারীদের ক্ষেত্রে লক্ষণ:
- যোনি থেকে সবুজ বা হলুদ রঙের দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব।
- যোনিতে চুলকানি বা জ্বালাপোড়া।
- যৌনমিলনের সময় ব্যথা।
- প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া।
- যোনির চারপাশ লালচে হওয়া বা ফোলা।
পুরুষদের ক্ষেত্রে লক্ষণ:
- প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া বা অস্বস্তি।
- লিঙ্গ থেকে স্বচ্ছ স্রাব বের হওয়া।
- প্রস্রাবে ঘন ঘন চাপ অনুভব।
- যৌনমিলনের সময় অস্বস্তি।
লক্ষণহীন সংক্রমণ:
অনেক পুরুষ ও কিছু নারী এই রোগে আক্রান্ত হলেও কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। তবে তারা অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
ট্রাইকোমোনিয়াসিস প্রতিরোধ ও সতর্কতা
সুরক্ষিত যৌনমিলন:
- কন্ডম ব্যবহার করুন।
- একাধিক যৌন সঙ্গী এড়িয়ে চলুন।
যৌন স্বাস্থ্য বজায় রাখা:
- যৌনাঙ্গের সঠিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।
- যৌন খেলনা জীবাণুমুক্ত করুন।
সংক্রমণ হলে চিকিৎসা করান:
- সংক্রমণ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- সঙ্গীকে চিকিৎসার আওতায় আনুন।
যৌনমিলনে বিরতি দিন:
- চিকিৎসা চলাকালীন যৌনমিলন থেকে বিরত থাকুন।
উপসংহার
ট্রাইকোমোনিয়াসিস একটি সাধারণ তবে সংক্রমণযোগ্য যৌনবাহিত রোগ। এটি চিকিৎসাযোগ্য হলেও অবহেলা করলে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে রোগ সম্পূর্ণরূপে নিরাময় সম্ভব। যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং সুরক্ষিত যৌন অভ্যাসের মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়।